• সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের কঠোর বাজার মনিটরিং নন্দীগ্রামে ৪টি গরু ও ১টি পিকআপ সহ গরুচোর গ্রেফতার GMKS এর সদস্য হলেনঃ মোঃ হাসান মাহমুদ  নিখোঁজ এর ১ দিন পর সেফটি টেংকি থেকে সবিতা রানীর লাশ উদ্ধার, ২৪ ঘন্টায় রহস্য উদঘাটন করলো ডিবি পুলিশ  শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ❞ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  রাণীশংকৈলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৬ জন বিরামপুরে উদ্ধার হওয়ার শিশুটি এখন মায়ের কোলে!! প্রতিশোধ- প্রতিহিংসা চাই না আমরা শান্তিময় বাংলাদেশ গড়বো রাণীশংকৈলে বিএনপি মহাসচিব ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা তৈরী করুন নিহত পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা জরুরী  — মির্জা ফখরুল ধরলা নদীতে গোসল করতে গিয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র নিখোঁজ 

কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ

মোঃ নয়ন মিয়া / ১৪৮ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

 

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই ইউনিটটির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হলো। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৩টি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ থাকলেও সচল ছিল তৃতীয় ইউনিটটি। যা থেকে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছিল এবং জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল।

 

 

 

বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। এর আগে ১ মাস ৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেল ৫টা ১৭ মিনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়। যা দুই দিন সচল থাকার পরেই আবার বন্ধ হয়ে গেল।

 

জানাযায়, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে সংগৃহীত কয়লা দিয়ে ৫২৫ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল।

 

পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী ২০২৫ সালে তাদের মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি মোতাবেক, এ সময় উৎপাদন সচল রাখতে ছোট ধরনের মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও তার কিছুই করেনি চিনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। যে কারণেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বার বার ত্রুটি দেখা দিলেও সঠিকভাবে মেরামত করা সম্ভব হয়নি। সেই কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজ বারবার ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

 

 

 

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রতিটি ইউনিট সচল রাখতে প্রয়োজন হয় দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প। যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে; কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই তৃতীয় ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি পাম্প নষ্ট থাকায় যেকোনো সময় বন্ধের ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প হিসেবে একটি ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প দিয়ে চলে আসছিল এর উৎপাদন কার্যক্রম।

 

 

 

ফলে মাঝে মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হতো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। একাধিকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল কে বিষয়টি অবগত করলে তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি।

 

 

 

সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর মেরামতের মাধ্যমে ইউনিটটি চালু করা হলে দুই দিনের মাথায় আবারও ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে একবারে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম।

 

 

 

সূত্র মতে তৃতীয় ইউনিট থেকে বর্তমানে উৎপাদিত ১৯০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল। এটি সচল রাখতে প্রতিদিন ২২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়।

 

 

 

সূত্রটি আরও জানায়, ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে সংস্কার কাজের জন্য বন্ধ আছে। ২ নম্বর ইউনিট ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও উৎপাদন হতো ৬৫-৭০ মেগাওয়াট।

 

 

 

একই সাথে ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত ৯টার পর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লাভিত্তিক ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিটি সংস্কার কাজের জন্য বন্ধ করা হয়। ১ নম্বর ইউনিট ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার হলেও উৎপাদন হতো ৬০-৬৫ মেগাওয়াট। একই সঙ্গে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে চরম বিঘ্নিত হচ্ছে।

 

 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে কয়লা মজুত রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে দৈনিক কয়লা সরবরাহ করা হয় প্রায় ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রেখে স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। তবে, তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে কখনই চালানো হয়নি। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সরবরাহকৃত কয়লার ওপর নির্ভর করে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।

 

 

 

বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক মুঠোফোনে জানান, প্রতিটি ইউনিটের জন্য দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প থকে। যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই তৃতীয় ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি পাম্প নষ্ট হয়ে যায়।

 

 

 

এরপর থেকে একটি পাম্প দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। কিন্তু এই একটি পাম্পও সোমবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর দিনব্যাপী চেষ্টা করেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে উৎপাদন।

 

 

 

একই সঙ্গে তিনি আরও জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। তারা দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে এবং বলেছে, চীন থেকে মেশিন এলেই উৎপাদন শুরু করা যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরোও সংবাদ