জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত ৩রা ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত, অছাত্রদের হল থেকে বের করা, নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিশ্চিত করা ও মাদক সিন্ডিকেট চিহ্নিত এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আ র ক রাসেলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের এক পর্যায়ে, সম্প্রতি বহিরাগত এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান ও নিপীড়ক শিক্ষক জনির কুশপুত্তলিকা দাহ করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে যে সিদ্ধান্তগুলো এসেছে তার একটিরও পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষক সমিতির সভায় এ বিষয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। সেখানে কোন শিক্ষকেরই মতের ভিন্নতা ছিলো না। যদি সিন্ডিকেটের দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখি, তাহলে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হলে তার দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে।
নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে প্রক্টর ও প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি চেয়ে অধ্যাপক সোহেল বলেন, সারাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ঢাবি চবিতে নিপীড়কদের বিচার হচ্ছে। অথচ আমাদের এখানে তা হচ্ছেনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোথাও নিরাপদ পরিবেশ নেই। ভর্তি পরীক্ষা নিতে চাইলে, সবার জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা যে দাবিগুলো জানিয়েছি তা এই ক্যাম্পাস বাঁচানোর দাবি। এখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই ক্যাম্পাসে একজন নিপীড়ক শিক্ষক বহাল তবিয়তে আছে, তবুও তাকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনো আয়োজন করা হয়নি৷
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগি সামিহা বলেন, একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে অন্যদিকে ক্যাম্পাসে প্রহসন চলছে। প্রশাসন এখনো সাবেক শিক্ষার্থীদের বের করতে পারে নাই। প্রশাসন যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে যেন ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। প্রশাসন বলেছিল পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে সকল অছাত্রদের বের করে দিবে কিন্তু তারা এখনো বের করতে পারেনি। প্রশাসন গুটি কয়েক অছাত্রদের বের করে দিয়ে দেখাচ্ছে যে আমরা তো অছাত্রকে বের করে দিচ্ছি। সামনে ভর্তি পরীক্ষা, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করুক। আমাদের যে আন্দোলন এ আন্দোলন চলবে।
সমাবেশে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে দুর্বার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply